ইসলামী বই


বাজারে বিভিন্ন দোয়ার বই পাওয়া যায়, কিন্তু বেশীরভাগ সময়েই দেখা যায় তাতে বিভিন্ন মনগড়া আমল এবং কবিদের রচিত কবিতা দোয়া হিসেবে দেয়া থাকে। এসব দোয়া পড়লে সোয়াব তো হবেই না বরং বিদআত করার গুনায় লিপ্ত হতে হবে। তাই অনেক খুজে এই দোয়ার বইটি পেলাম যাতে শুধুমাত্র পবিত্র কুরআন ও হাদীসে উল্লেখিত দোয়াগুলোই সঙ্কলন করা হয়েছে।
এই চমৎকার দোয়ার বইটির নাম “হিসনুল মুসলিম” মূল লেখকঃ শাইখ সাঈদ ইবনে আলী আল-কাহতানি। অনুবাদ করেছেন মোঃ এনামুল হক (মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়)। সম্পাদনা করেছেন মোঃ রকীবুদ্দীন হুসাইন। ইসলামী গবেষণা ও ফতোয়া অধিদপ্তর, রিয়াদ থেকে প্রকাশিত হয়েছে। বইটিতে মূল আরবীর সাথে সাথে প্রতিটি দোয়ার বাংলা অর্থও দেয়া হয়েছে।
আমাদের প্রিয় মুসলিম ভাই ও বোনদের সুবিধার জন্য বইটির ডাউনলোড লিঙ্ক দিয়ে দিলাম।

দোয়ার বইটি ডাউনলোড করতে এখানে ক্লিক করুন

Hisnul Muslim (4MB)
আলী হাসান তৈয়ব
(ক)
সদ্য কৈশোর পেরুনো রাসনা খান বরাবর ভদ্র ও শান্ত স্বভাবের মেয়ে। রোযা রাখার বয়সে  পৌঁছার আগ থেকেই সে রোযা রাখতে চাইতো। সাহরির সময় জাগিয়ে দেবার জন্য মা-বাবাকে বারবার বলে রাখতো। কিন্তু বাবা-মা তাকে ডাকতেন না মেয়ের জন্য এতক্ষণ উপোস থাকা কষ্টকর বিবেচনা করে। রাসনা এখন ইন্টারমিডিয়েটের ছাত্রী। ছোটবেলার সেই অনভ্যাসের জের হিসেবে আজও তার পক্ষে রোযা রাখা সম্ভব হয় না।
(খ)
আতিক সাহেবের (ছদ্মনাম) অনেকগুলো ছেলে-মেয়ে। ওরা সবাই এখন পরিণত বয়সী। ছেলেরা ব্যবসা-বাণিজ্য করে বেশ অর্থ-কড়ির মালিকও হয়েছে। পিতার প্রতি অকৃত্রিম ভালোবাসা আর শ্রদ্ধায় শারীরিক অসুস্থতার জন্য তারা তাকে অখণ্ড অবসরে রেখেছে। অফুরান অবকাশে বাবার সময় কাটাবার জন্য তাঁর ঘরে একটি রঙ্গিন টিভিও সেট করে দিয়েছে। অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনি দু'এক ওয়াক্ত নামাজ মসজিদে গিয়ে পড়লে পড়েন নয়তো তা কাযাই হয়ে যায়। বাকি সময়গুলো বলতে গেলে তার টিভি সেটের সামনে দিয়েই বয়ে যায়।
(গ)
একহারা গড়নের ফুটফুটে শিশু মীমকে তার মা-বাবা বালিকা মাদরাসায় পড়তে দিয়েছিল  তাদের আত্মীয় পরিবারের কয়েকটি মেয়েকে মাদরাসা থেকে আদর্শ সন্তান হিসেবে গড়ে উঠতে দেখে। মীম পড়া-শোনায় বেশ ভালো। আদব-শিষ্টাচারেও মন্দ না। মাদরাসার দেয়ালঘেরা নিরাপদ ও পুণ্যময় পরিবেশে সে নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে অস্বাভাবিক স্বাভাবিকতায়।
ছয়/সাত মাসের মাদরাসা জীবনে সে অনেক বদলে গেছে। চলাফেরায় যেমন শিষ্টতা মুখাবয়বেও তেমন কমনীয়তা বেড়েছে। আট বছরের ফুটফুটে মীম হয়েছে তাই মাদরাসা ও পরিবারে সবার প্রিয়। সন্তানের কচি জীবনে পরিবর্তনের রেখা ফুটে উঠলেও তার বাবা-মার জীবন-যাপন পদ্ধতিতে রূপান্তর বা পরিবর্তনের ছোঁয়া লাগেনি এতোটুকু। আগের মতো আজো তারা বেনামাযী এবং নাটক-সিনেমার অন্ধ অনুরাগী।
কী এক অপরাধে এক তরুণ শিক্ষক বাচ্চাটিকে একটু বেশিই প্রহার করে বসে। শিক্ষকের এই অপরাধে (?) ক্ষিপ্ত হয়ে মীমের বাবা-মা মাদরাসা পরিচালককে অনেক কটু-কাটব্য শুনিয়ে যায়। থানা-মামলার হুমকি পর্যন্ত দেয়। মাদরাসা কর্তৃপক্ষ দুঃখ প্রকাশ করে জানায়, এখানে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই আইন করা আছে, কোনো বাচ্চাকে প্রহার করা যাবে না। তাদেরকে আদরে-কৌশলে শিক্ষা দিতে হবে। তদুপরি লঘু পাপে গুরু দণ্ড দেয়ার অপরাধে শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্তও করা হয়েছে।
মীমের বাবা-মা’র ক্ষোভ এতেও প্রশমিত হয় না। মীমকে মাদরাসা থেকে নিয়ে গিয়ে ভর্তি করিয়ে দেয় শিক্ষা ও সভ্যতার আলো বঞ্চিত তাদের গ্রামের এক ব্রাক স্কুলে। (মীমের খালার ভাষ্য, মাদরাসার অনভিপ্রেত ঘটনা উপলক্ষ মাত্র। প্রকৃত ব্যাপার হলো, মীমকে ব্রাক স্কুলে দেয়ায় সন্তানের শিক্ষাসহ আছে তাদের বাড়তি অনেক পাওনা।)
আমাদের সমাজের এ তিনটি খণ্ডচিত্রে দেখতে পাচ্ছি, সন্তানের প্রতি ভালোবাসা দেখাতে গিয়ে রাসনাকে তার বাবা-মা ফরজ রোযা পালন করতে দিচ্ছেন না। রাসনার বয়স তেরো পেরিয়েছে অথচ দশ বছর বয়স থেকেই রোযা করা উচিত। রাসনার রোযা করার অভ্যাস গড়ে ওঠেনি বলে আজ কলেজে পা রেখেও ফরজ রোযা করতে পারছে না। অশীতিপর আতিক সাহেবের বয়স এখন শুধু ইবাদত-বন্দেগী করে কাটিয়ে দেবার। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, তার ছেলেরা পিতার প্রতি ভালোবাসা দেখাতে গিয়ে তাকে সুযোগ করে দিয়েছে নাজায়েয টিভি প্রোগ্রামে দিবা-রাত্রি মেতে থাকার! মীমের বাবা-মা সন্তানের ভালোবাসার পারাকাষ্ঠা দেখাতে গিয়ে বেহেশতের কুসুমিত পথ মাদরাসার অনাবিল পরিবেশ থেকে নিয়ে নাচ-গান শিখিয়ে, দু’চারটি টাকা বিলিয়ে ইসলাম ও দেশের সংস্কৃতির বিরুদ্ধে অবিরাম কাজ করে যাওয়া ব্রাক স্কুলে ভর্তি করে দিয়েছেন।
হ্যাঁ, এভাবে আমরা অনেক কাজই করি প্রিয়জনের জন্য ভালো মনে করে। রাসনাকে তার পিতামাতা সিয়াম সাধনায় নামতে দেননি, মীমকে তার বাবা-মা মাদরাসা থেকে সরিয়ে এনে ব্রাক স্কুলে দিয়েছেন এবং আতিক সাহেবের ছেলেরা বাবার জন্য রঙ্গিন টিভির ব্যবস্থা করেছে— সন্দেহ নেই সবই করা হয়েছে তাদের সুখের জন্য। কারণ বলাবাহুল্য, পিতা-মাতার কাছে সন্তানের কিংবা সন্তানের কাছে পিতা-মাতার অকল্যাণ কখনো কাম্য হতে পারে না।
কিন্তু একটু চিন্তা করে দেখা দরকার এসব কি সত্যি তাদের জন্য কল্যাণকর? ফরজ রোযা ত্যাগ করার শাস্তি তো ভয়াবহ। জান্নাতের পথ থেকে সরিয়ে জাহান্নামের পথে নেয়া কি মীমের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে? আতিক সাহেব জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে টিভি নিয়ে মশগুল। তাঁর ছেলেরা একবারও ভেবে দেখেছেন কি টিভি দেখা অবস্থায় যদি তাদের বাবার মৃত্যু এসে যায় তবে কবরে তাঁর অবস্থা কী হবে?
ভালোবাসার নামে আমরা এসব কী করছি? কোথায় নিয়ে যাচ্ছি প্রিয়জনদের? এ ভালোবাসার কী পরিণাম অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য? চিন্তা করে দেখেছি কি ভালোবাসতে গিয়ে আমরা নিজ হাতে অবচেতনমনে প্রিয়জনকে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করছি!!
সমাজে অনেক বাবা-মা'ই এমন আছেন যারা সন্তানের সিয়াম সাধনা বরদাশত করতে পারেন না! তরুণ বয়সে অনাবিল চেহারায় দাড়ি রাখা সহ্য করতে পারেন না। শেষ রাতে ঘুম ভাঙ্গতে তকলিফ হবে ধারণা করে ফজর নামাজের জন্য তাদের জাগিয়ে দেন না। বাড়ির বাইরে গিয়ে কিভাবে রাত কাটাবে সে চিন্তায় সন্তানকে আবাসিক ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেন না। (অবশ্য বিস্ময়কর হলেও সত্য, এরাই আবার পরীক্ষার সময় সন্তানকে ভোরবেলা জাগিয়ে দেন। মর্নিং শিফটে ক্লাস থাকলে প্রত্যুষেই বিছানা থেকে আদরের সন্তানকে জোর করে তুলে দেন। বড় চাকুরির আশায় তাকে শুধু জেলার বাইরে নয় দেশের বাইরে পর্যন্ত পড়াশোনার জন্য পাঠিয়ে দেন!)
এসব অভিভাবক কি একটু গভীরভাবে চিন্তা করে দেখেছেন, তাদের এমনতর ভালোবাসা আত্মজ-প্রিয়জনের জন্য কতোটা বিপদের কারণ হতে পারে? তাদের নিজেদেরই জন্যই বা কী পরিণাম বয়ে আনতে পারে? আজ যারা সন্তানের বা পিতার সাময়িক সুখের জন্য আল্লাহর অবাধ্য হওয়া মেনে নিচ্ছেন তারা কি মহাবিচার প্রাঙ্গণে তাদের থেকে আল্লাহর অসন্তোষ এড়াতে পারবেন? কিংবা আদরের এই সন্তানরা বা ভক্তির এই বাবা কি তাদের কোনো কাজে আসবে? যেই কুরআনের প্রতি ঈমান আনার কারণে আমরা মুসলমান সেই কুরআন কী বলছে শুনুন—
فَإِذَا جَاءَتِ الصَّاخَّةُ (33) يَوْمَ يَفِرُّ الْمَرْءُ مِنْ أَخِيهِ (34) وَأُمِّهِ وَأَبِيهِ (35) وَصَاحِبَتِهِ وَبَنِيهِ (36) لِكُلِّ امْرِئٍ مِنْهُمْ يَوْمَئِذٍ شَأْنٌ يُغْنِيهِ (37)
'অতঃপর যখন বিকট (কিয়ামতের) আওয়াজ আসবে, সেদিন মানুষ পালিয়ে যাবে তার ভাই থেকে, তার মা ও তার বাবা থেকে, তার স্ত্রী ও তার সন্তান-সন্ততি থেকে। সেদিন তাদের প্রত্যেকেরই একটি গুরুতর অবস্থা থাকবে, যা তাকে ব্যতিব্যস্ত রাখবে।'[1]
অন্যত্র কুরআন আমাদের বিবেকের দুয়ারে কড়া নেড়ে বলছে,
وَلَا تُخْزِنِي يَوْمَ يُبْعَثُونَ (87) يَوْمَ لَا يَنْفَعُ مَالٌ وَلَا بَنُونَ (88)
'আর যেদিন পুনরুত্থিত করা হবে সেদিন আমাকে লাঞ্ছিত করবেন না। যেদিন ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি কোনো উপকারে আসবে না।'[2]
وَاتَّقُوا يَوْمًا لَا تَجْزِي نَفْسٌ عَنْ نَفْسٍ شَيْئًا وَلَا يُقْبَلُ مِنْهَا شَفَاعَةٌ وَلَا يُؤْخَذُ مِنْهَا عَدْلٌ وَلَا هُمْ يُنْصَرُونَ (48)
'আর তোমরা সে দিনকে ভয় কর, যেদিন কেউ কারো কোনো কাজে আসবে না। আর কারো পক্ষ থেকে কোনো সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না এবং কারও কাছ থেকে কোনো বিনিময় নেয়া হবে না। আর তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না।'[3]
অতএব শুধু ভালোবাসলেই হবে না; ভালোবাসার উপায়টি আখেরে কল্যাণ বয়ে আনবে কি-না তাও মাথায় রাখতে হবে। আমাদের কোনো ভালোবাসাই যেন আল্লাহর হুকুম পালনে অন্তরায় না হয় সে ব্যাপারে সজাগ থাকতে হবে। আল্লাহ আমাদের তাওফীক দিন। আমীন




[1]. সূরা আবাসা : ৩৩-৩৭।

[2]. সূরা আশ-শুআরা : ৮৭-৮৮।

[3]. সূরা আল-বাকারা : ৪৮।

                                                                  (সূ্ত্র): কোরআনের আলো.কম

অনুবাদ করেছেনঃ  প্রফেসর ডঃ মুহাম্মাদ মুজিবুর রহমান

প্রকাশনাঃ  দারুসসালাম পাবলিকেশন্স , সৌদি আরব


সূরা 'আল ক্বামার' মক্কায় অবতীর্ণ ক্বুরানের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূরা। আল্লাহ তা’আলা এই সূরায় একটি বিশেষ আয়াত চার বার উল্লেখ করেছেন। সে বিশেষ আয়াতটির অর্থ হচ্ছে, 'অবশ্যই আমি শিক্ষা গ্রহণ করার জন্যে ক্বুরানকে সহজ করে দিয়েছি, অতএব আছে কি তোমাদের মাঝে কেউ এর থেকে শিক্ষা গ্রহণ করার?'
আল কুর’আন সম্পুর্ণ মানব্জাতির জন্য পথপ্রদর্শক স্বরূপ যার মাঝে আপনিও অন্তর্ভুক্ত, প্রিয় বন্ধু। যেহেতু আমরা কেউই পথভ্রষ্ট হতে চাইনা, তাই এটা আমাদের জন্য অপরিহার্য যে আমরা কুর’আন সুধু তিলাওয়াতই করবনা বরং তা বুঝব এবং সেইসাথে নিজেদের জীবনে প্রয়োগ করব।
রাসূল -সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-আমাদেরকে শ্রেষ্ঠ হবার একটি সহজ পদ্ধতি শিখিয়ে গেছেনঃ
তোমাদের মাঝে শ্রেষ্ঠ হল যে নিজে কুর’আন শিখে এবং অন্যকে শেখায়। (আল-বুখারী)
অতএব, আসুন, কুর’আন নিজে শিখুন এবং অন্যকে শিখান, নিজেকে শ্রেষ্ঠ মুসলিমদের একজন হিসেবে গড়ে তুলুন ইনশাআল্লাহ।

সংক্ষিপ্ত বর্ণনাঃ সৌদি আরবের আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান দারুসসালাম এর প্রকাশ করেছে এই কুরআনুল কারীম। এ তরজমা দারুসসালামের দীর্ঘদিনের আশা আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন।এ মহৎ কাজে এগিয়ে এসে বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ডঃ মুহাম্মাদ মুজিবুর রহমান অনুবাদ করেছেন ।  এই তরজমার বিশেষত্ব হচ্ছেঃ
  • বইটি তরজমায় ত্রুটি বিচ্যুতির ব্যপারে গবেষক মন্ডলীর পরামর্শ নেয়া হয়েছে।
  • তাফসীর ইবনে কাসীর থেকে তরজমার অংশটি নেয়া হয়েছে।
  • এই কুরআনে ডান দিকে বড় অক্ষরে আরবি (persian script) লেখা হয়েছে, বাম দিকে বাংলা সহজ সরল অনুবাদ, এবং নিচে আয়াতের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে।
  • কুরাআনের অর্থ অনুধাবনের জন্য প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সহীহ হাদিসের অনুবাদের মাধ্যমের টীকা সংযোজন করা হয়েছে।অধিকাংশ হাদীস সহীহ বুখারী থেকে নেয়া হয়েছে। মূল আরবি গ্রন্থ থেকে এই হাদীস সমূহ অনুবাদ করা হয়েছে।
  • বাংলা ভাষাভাষী সকল পর্যায়ে মুসলমান ভাইদের কুরআন বুঝে পড়ার আগ্রহের দিকে লক্ষ রেখে তরজমা সহজ, প্রাঞ্জল ও বোধগম্য করআর চেষ্টা করা হয়েছে, যাতে তিলাওয়াতের সাথে সাথে কুরআন মাজিদের অর্থও বুঝতে পারেন।
স্ক্যান কৃত এই কুরআনটি পড়ার জন্য আপনার কম্পিউটারে Adobe Reader সফটওয়্যারটি থাকা আবশ্যক। আগে থেকে তা না থাকলে এখান থেকে ডাউনলোড করে নিন।

Download/ডাউনলোড [26.6 MB] 

ডাউনলোড - [HQ Version - সব রিডার দিয়ে ওপেন করার জন্য] 

 Download from 4shared
Download from MediaFire

                                                        (সূ্ত্র): কোরআনের আলো.কম


আমাদের দেশে ইসলামী ইলম চর্চার ইতিহাস অনেক পুরোনো । কুরআন ও হাদীসের বঙ্গানুবাদও হয়েছে প্রায় দু’শো বছর । আমাদের দেশে অনেক গুলো প্রকাশনী সিয়াহ সিত্তাহ সহ আরো অনেক হাদীস সংকলন গ্রন্থ প্রকাশ করেছে । কিন্তু সব প্রকাশনীর প্রকাশনার মান এক রকম নয় । তাই আপনারা সব থেকে সেরা হাদীস গ্রন্থ সহীহুল বুখারীর বঙ্গানুবাদ কোন প্রকাশনী থেকে কিনবেন তার একটা পরামর্শ আপনাদের দিতে চাই ।
আমি সহীহুল বুখারীর খন্ড গুলি মোট তিনটি প্রকাশনী থেকে সংগ্রহ করেছি । এগুলো হচ্ছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ , আধুনিক প্রকাশনী ও তাওহীদ পাবলিকেশন্স ।এ তিনটির প্রকাশনার ভেতরে আমার তুলনামূলক তাওহীদ পাবলিকেশন্স এর প্রকাশনা বেশি ভাল লেগেছে । তাই আমি আপনাদের ওই প্রকাশনীর সহীহুল বুখারীর বঙ্গানুবাদ সংগ্রহ করার জন্য অনুরোধ করবো । তাওহীদ পাবলিকেশন্স এর প্রকাশনার বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলি এর ভূমিকা থেকে কিছু অংশ আমি এখানে তুলে ধরছিঃ
“আমাদের দেশে বাংলা ভাষায় হাদীস অনুবাদের কাজ যদিও বহু পূর্বেই শুরু হয়েছে তবুও বাংলা ভাষায় হাদীস চর্চায় আমরা পিছিয়ে । ফলে এখনও আমরা সহীহ হাদীস বাদ দিয়ে হাদীসের ব্যাপারে অশিক্ষিত অনভিজ্ঞ নামধারী কতিপয় আলিমদের মনগড়া ফাতাওয়ার উপর আমল করতে গিয়ে আমাদের আমলের ক্ষতি সাধন করছি । আর সাথে সাথে সহীহ হাদীস থেকে দূরে সরে গিয়ে আমরা তাকলীদের পথে পা বাড়াতে বাধ্য হচ্ছি ।
আমাদের দেশে যারা এ সকল সহীহ হাদীস গ্রন্থের অনুবাদ প্রকাশ করছেন তাদের অনেকেই আবার হাদীসের অনুবাদে সহীহ হাদীসের বিপরীতে মাযহাবী মতামতকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে অনুবাদে গড়মিল ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন ।নমুনা স্বরুপ মূল বুখারীতে ইমাম বুখারী কিতাবুস সাওমের পরে কিতাবুত তারাবীহ নামক একটি পর্ব রচনা করেছেন । অথচ ভারতীয় মূদ্রণের মধ্যে …………… (?) কিতাবুত তারাবীহ কথাটি মুছে দিয়ে সেখানে কিয়ামুল লাইল বসানো হয়েছে । অবশ্য প্রকাশক পৃষ্ঠার একপাশে কিতাবুত তারাবীহ লিখে রেখেছেন । ….. (আরবী) ।     সকলেই এ ব্যাপারে একমত যে , এ অধ্যায় দ্বারা সলাতুত তারাবীহ উদ্দেশ্য । আর মিশর ও মধ্যপ্রাচ্য হতে প্রকাশিত সকল বুখারীতে কিতাবুত তারাবীহ বহাল তবিয়তে আছে , যা ছিল ইমাম বুখারীর সংকলিত মূল বুখারীতে ।
আর একটি প্রকাশনী জানি না ইচ্ছাকৃত ভাবে না অনিচ্ছাকৃত ভাবে এই কিতাবুত তারাবীহ নামটি ছেড়ে দিয়ে তৎসংশ্লিষ্ট হাদীস গুলোকে কিতাবুস সাওমে ঢুকিয়ে দিয়েছেন । অনেক স্থানে ইচ্ছাকৃত ভাবে ভুল অনুবাদ করেছেন । অনেক স্থানে অধ্যায়ের নাম পরিবর্তন করে ফেলেছেন । কোথাও বা মূল হাদীসকে অনুচ্ছেদে ঢুকিয়ে দিয়ে বুঝাতে চেয়েছেন যে , এটা হাদীসের মূল সংকলকের ব্যক্তিগত কথা বা মত । কোথাও বা সহীহ হাদীসের বিপরীতে মাযহাবী মাসআলা সম্বলিত লম্বা লম্বা টিকা লিখে সহীহ হাদীসকে ধামাচাপা দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টায় লিপ্ত হয়েছেন । এতে করে সাধারণরা পড়ে গিয়েছেন বিভ্রান্তির মধ্যে । কারণ টিকা গুলো এমনভাবে লেখা হয়েছে যে , সাধারণ পাঠক মনে করবেন টিকাতে যা লেখা হয়েছে সেটাই ঠিক ; আসল তথ্য উদঘাটন করতে তারা ব্যর্থ হচ্ছেন । আরেক একজন শাইখুল হাদীসের বুখারীর অনুবাদের কথাতো বলার অপেক্ষাই রাখে না । তিনি বুখারীর অনুবাদ করেছেন না প্রতিবাদ করেছেন তা আমাদের বুঝে আসেনা । কারণ তিনি অনুবাদের চেয়ে প্রতিবাদমূলক টিকা লিখাকে বেশী প্রাধান্য দিয়েছেন , যা মূল কিতাবের সাথে একেবারেই সম্পর্কহীন । যে কোন হাদীস গ্রন্থের অনুবাদ করার অধিকার সবার জন্য উন্মুক্ত । কিন্তু সহীহ হাদীসের বিপরীতে অনুবাদে , ব্যাখ্যায় হাদীস বিরোধী কথা বলা জঘন্য অপরাধ ।
এই প্রথমবারের মত আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত হাদীস নম্বর ও অন্যান্য বহুবিধ বৈশিষ্ট্যসহ সহীহুল বুখারীর বঙ্গানুবাদ প্রকাশিত হল । শুধু তাই নয় , বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে এই প্রকাশনার মধ্যে যা এ পর্যন্ত প্রকাশিত সহীহুল বুখারীর বঙ্গানুবাদে পাওয়া যাবে না । এর মধ্যে উল্লেখ যোগ্য কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হলো :
. আল-মু’জামুল মুফাহরাস লি আলফাযিল হাদীস হচ্ছে একটি বিষ্ময়কর হাদীস – অভিধান গ্রন্থ । গ্রন্থটিতে আরবি বর্ণমালার ধারা অনুযায়ী কুতুবুত ‍তিস’আহ ( বুখারী , মুসলিম , তিরমিযী , আবু দাউদ , নাসাঈ , ইবনু মাজাহ , মুসনাদ আহমাদ , মুওয়াত্তা ইমাম মালিক , দারেমী ) নয়টি হাদীস গ্রন্থের শব্দ আনা হয়েছে । যে কোন শব্দের পাশে সেটি কোন কোন হাদীস গ্রন্থে এবং কোন পর্বে বা কোন অধ্যায়ে আছে তা উল্লেখ রয়েছে ।
আমাদের দেশে এ গ্রন্থটি অতটা পরিচিতি লাভ না করলেও বিজ্ঞ আলিমগণ এটির সাথে খুবই পরিচিত । বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদীস বিভাগের ছাত্র শিক্ষক সবার নিকট বেশ সমাদৃত । অত্র গ্রন্থের হাদীস গুলো আল মু’জামুল মুফাহরাসের ক্রমধারা অনুযায়ী সাজানো হয়েছে । যার ফলে অন্যান্য প্রকাশনার হাদীসের নম্বরের সাথে এর নম্বরের মিল পাওয়া যাবে না । আর এর সর্বমোট হাদীস সংখ্যা হবে ৭৫৬৩ টি । আধুনিক প্রকাশনীর হাদীস সংখ্যা হচ্ছে ৭০৪২ টি । আর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের হাদীস সংখ্যা হচ্ছে ৬৯৪০ টি ।
. যে সব হাদীস একাধিকবার উল্লেখ হয়েছে অথবা হাদীসের অংশ বিশেষের সংগে মিল রয়েছে সেগুলোর প্রতিটি হাদীসের শেষে পূর্বোল্লিখিত ও পরোল্লিখিত হাদীসের নম্বর যোগ করা হয়েছে । যার ফলে একটি হাদীস বুখারীর কত জায়গায় উল্লেখ আছে বা সে বিষয়ের হাদীস কত জায়গায় রয়েছে তা সহজেই জানা যাবে । আর একই বিষয়ের উপর যাঁরা হাদীস অনুসন্ধান করবেন তাঁরা খুব সহজেই বিষয়ভিত্তিক হাদীস গুলো বের করতে পারবেন । যেমন ১০০১ নং হাদীস শেষে বন্ধনীর মধ্যে রয়েছে :  ( ১০০২ , ১০০৩ , ১৩০০ , ২৮০১ , ২৮১৪ , ৩৯৬৪ , ৩১৭০ , ৪০৮৮ , ৪০৮৯ , ৪০৯০ , ৪০৯১ , ৪০৯২ ,৪০৯৪ , ৪০৯৫ , ৪০৯৬ , ৬৩৯৪ , ৭৩৪১ ) বন্ধনীর হাদীস নম্বর গুলোর মধ্যে ১০০১ নং হাদীসে উল্লিখিত বিষয়ে আংশিক বা পূর্ণাঙ্গ আলোচনা পাওয়া যাবে ।
৩. বুখারীর কোন হাদীসের সঙ্গে সহীহ মুসলিমের কোন হাদীসের মিল থাকলে মুসলিমের পর্ব অধ্যায় ও হাদীস নম্বর প্রতিটি হাদীসের শেষে উল্লেখ করা হয়েছে । যেমন ১০০১ নং হাদীস শেষে বন্ধনীর মধ্যে রয়েছে : ( মুসলিম ৫/৫৪ হা/৬৭৭ ) অর্থাৎ পর্ব নং ৫ , অধ্যায় নং ৫৪ , হাদীস নং ৬৭৭   সহীহ মুসলিমের হাদীসের যে নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে তা মু’জামুল মুফাহরাসের নম্বর তথা ফুয়াদ আব্দুল বাকী নির্ণিত নম্বরের সঙ্গে মিলবে ।
. বুখারীর কোন হাদীস যদি মুসনাদ আহমাদের সঙ্গে মিলে তাহলে মুসনাদ আহমাদের হাদীস নম্বর সেই হাদীসের শেষে যোগ করা হয়েছে । যেমন ১০০১ নং হাদীস শেষে বন্ধনীর মধ্যে রয়েছে : ( আহমাদ ১৩৬০২ ) এটির নম্বর এহইয়াউত তুরাস আল-ইসলামীর নম্বরের সঙ্গে মিলবে ।
৫. আমাদের দেশে মুদ্রিত ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও আধুনিক প্রকাশনীর হাদীসের ক্রমিক নম্বরে অমিল রয়েছে । তাই প্রতিটি হাদীসের শেষে বন্ধনীর মাধ্যমে সে দুটি প্রকাশনার হাদীস নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে । যেমন ১০০১ নং হাদীস শেষে বন্ধনীর মধ্যে রয়েছে : ( আ.প্র.৯৪২ ই.ফা.৯৪৭ ) অর্থাৎ আধুনিক প্রকাশনীর হাদীস নং ৯৪২ , আর ইসলামিক ফাউন্ডেশনের হাদীস নং ৯৪৭ ।
. প্রতিটি অধ্যায়ের ( অনুচ্ছেদ ) ক্রমিক নং এর সঙ্গে কিতারে ( পর্ব ) নম্বরও যুক্ত থাকবে যার ফলে সহজেই বোঝা যাবে এটি কত নম্বর কিতাবের কত নম্বর অধ্যায় । যেমন ১০০১ নং হাদীসের পূর্বে একটি অনুচ্ছেদ রয়েছে যার নম্বর ১৪/৭ অধ্যায় : অর্থাৎ ১৪ নং পর্বের ৭ নং অধ্যায় ।
৭. যারা সহীহ বুখারীর অনুবাদ করতে গিয়ে সহীহ হাদীসকে ধামাচাপা দিয়ে যঈফ হাদীসকে প্রাধান্য দেয়ার জন্য বা মাযহাবী অন্ধ তাকলীদের কারণে লম্বা লম্বা টিকা লিখেছেন তাদের সে টিকার দলীল ভিত্তিক জবাব দেয়া হয়েছে ।
. আরবী নামের বিকৃত বাংলা উচ্চারণ রোধকল্পে প্রায় প্রতিটি আরবী শব্দের বিশুদ্ধ বাংলা উচ্চারণের চেষ্টা করা হয়েছে । যেমন : আয়েশা এর পরিবর্তে ‘আয়িশাহ্ , জুম্মা এর পরিবর্তে জুমু‘আহ্ , নবী এর পরিবর্তে নাবী , রাসূল এর পরিবর্তে রসূল , ম্ক্কা এর পরিবর্তে মাক্কাহ , ইবনে এর পরিবর্তে ইবনু , উম্মে সালমা এর পরিবর্তে উম্মু সালামাহ্ , নামায এর পরিবর্তে সলাত ইত্যাদি ইত্যাদি প্রচলিত বানানে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছে ।
. সাধারণের পাশাপাশি আলিমগণও যেন এর থেকে উপকৃত হতে পারেন সে জন্য অধ্যায় ভিত্তিক বাংলা সূচি নির্দেশিকার পাশাপাশি আরবী সূচি উল্লেখ করা হয়েছে ।
১০. বুখারীর কত জায়গায় কুরআনের আয়াত এসেছে এমনকি আয়াতের একটি শব্দ আসলেও সেটির সূরার নাম , আয়াত নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে ।
১১. ইনশাআল্লাহ সমৃদ্ধ অধ্যায় ভিত্তিক সূচি নির্দেশিকা সহ প্রতিটি খন্ডে থাকবে সংক্ষিপ্ত পর্বভিত্তিক বিশেষ সূচি নির্দেশিকা । এতে কোন পর্বে কতটি অধ্যায় ও কতটি হাদীস রয়েছে তা সংক্ষিপ্তভাবে জানা যাবে ।
১২. হাদীসে কুদসী চিহ্নিত করে হাদীসের নম্বর উল্লেখ ।
১৩. মুতাওয়াতির ১৪. মারফু’ ১৫. মাওকুফ ও ১৬. মাকতু হাদীস নির্দেশিকা প্রণয়ন করা হয়েছে । ফলে সে হাদীস গুলোকে সহজেই চিহ্নিত করা যাবে ।
১৭. প্রতিটি খন্ডের শেষে পরবর্তি খন্ডের কিতাব/পর্বভিত্তিক সূচি নির্দেশিকা উল্লেখ করা হয়েছে ।”
শুধু সহীহ বুখারী নয় যে কোন হাদীস গ্রন্থই তাওহীদ পাবলিকেশন্স থেকে কেনার জন্য আমার সু-পরামর্শ থাকলো । কারণ বুখারী মুসলিম ছাড়া অন্যান্য হাদীস গন্থে কিছু কিছু জাল ও যঈফ হাদীসও রয়েছে । যেগুলোর উপর আমল করা নিষিদ্ধ । একমাত্র তাওহীদ পাবলিকেশন্সই বিখ্যাত মুহাদ্দিস আল্লামা নাসির উদ্দিন আলবানী (রহঃ) এর তাহক্বীক্ব করা হাদীস গন্থ এর অনুবাদ প্রকাশ করেছে । যার উদাহরণ আপনারা যারা তাহক্বীক্ব রিয়াদুস সালেহীন ডাউনলোড করেছেন QuranerAlo.com থেকে তারা বুঝতে পারবেন ।আশা করি কুরআনের আলো .কম তাওহীদ পাবলিকেশন্স এর অন্যান্য হাদীস গ্রন্থ এবং সহীহ আক্বীদা এবং আমলের গ্রন্থও ভবিষ্যতে উপহার দিবে ।
আল্লাহ আমাদের যঈফ ও জাল হাদীস থেকে বাঁচার এবং সহীহ হাদীসের উপর সঠিকভাবে আমল করার তাওফীক দান করুন – আমীন ।

তাওহীদ প্রেস এন্ড  পাবলিকেশন্স
৯০, হাজী আবদুল্লাহ সরকার লেন, বংশাল, ঢাকা- ১১০০
ফোনঃ ০২৭১১২৭৬২, ০১১৯০৩৬৮২৭২, ০১৭১১৬৪৬৩৯৬, ০১৬১১৬৪৬৩৯৬

                                                                        (সূ্ত্র): কোরআনের আলো.কম
Design by Md.Sahahdad Hossain | Published by ZASJSS - মুসলিম উম্মার ঐক্য |