نظرة إلى وجه العالم أحب إلى الله من عباده ستين سنة صيا ما و قيا ما 

 “আলেমের চেহারার দিকে একবার তাকানো আল্লাহ তাআলার নিকট ষাট বছরের রোযা-নামাজের চেয়ে উত্তম ।

উলামায়ে কেরামের মর্যাদা ও শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে একাধিক আয়াত ও সহীহ 
হাদীস রয়েছে । তাছাড়া দ্বীনদার হক্কানী উলামায়ে কেরামের সংশ্রব অবলম্বনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা শরীয়তে অপরিসীম । লোকমুখে প্রসিদ্ধ উপরোক্ত কথা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের হাদীস নয় । সামআন ইবনে মাহদী- এর নামে জালকৃত পুস্তক ছাড়া কোথাও এর সন্ধান পাওয়া যায় না ।

-আল মাকাসিদুল হাসানা : 522, আল মাওযূআতুল কুবরা : 132, কাশফুল খাফা : 2/318, আল লুউলুউল মারসূ : 96

-সামআনের নামে এ জালকৃত পুস্তিকাটির জন্য আরও দ্রষ্টব্য : মীযানুল ইতিদাল : 2/234, লিসানুল মীযান : 3/114, আল মাসনূ : 247
  سؤر المؤمن شفاء

মানুষের মুখে একটি কথা প্রসিদ্ধ আছে যে, মুমিনের উচ্ছিষ্ট ওষুধ এবং তারা একে মহানবী (সাঃ) এর হাদীস মনে করে থাকে; অথচ এটি হাদীস নয় ।

মোল্লা আলী কারী (রহঃ) বলেন :
                        ليس له أصل مرفوع
অর্থাৎ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর হাদীসে তার কোন ভিত্তি নেই ।-আল মাসনূ : 106

আল্লামা মুহাম্মাদ নাজমুদ্দীন গাযযী (রহঃ)ও বলেছেন এটি হাদীস নয় ।কাশফুল খাফা : 1/458

খাবার শেষে পাত্র পরিস্কার না করা, একসাথে খাওয়ার সময় অন্যের উচ্ছিষ্ট খাবার বা পানীয় বস্তু ঘৃণা করা খুবই নিন্দনীয় । তাই খাবার শেষে পাত্র ভালভাবে  পরিস্কার করে খাওয়া এবং অন্যের উচ্ছিষ্টকে ঘৃণা না করা উচিত । এমনকি আল্লাহওয়ালাদের উচ্ছিষ্ট দ্বারা বরকত অর্জনের প্রমাণ পাওয়া যায় ।

হাদীস শরীফে আছে :

ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এর সাথে আমি আর খালেদ ইবনে ওয়ালিদ মাইমুনা (রাঃ)-এর কাছে গেলে তিনি পাত্রে করে আমাদের জন্যে দুধ হাজির করেন । রাসূলুল্লাহ (সাঃ) দুধ পান করেন । আমি ছিলাম তাঁর ডান দিকে আর খালেদ বাম দিকে । তাই তিনি আমাকে বলেন, আগে পান করার হক তোমারই, তবে তুমি ইচ্ছে করলে খালেদকে অগ্রাধিকার দিতে পার । আমি (ইবনে আব্বাস) বললাম, আপনার উচ্ছিষ্টের ব্যাপারে আমি কাউকে অগ্রাধিকার দিতে পারি না ।-জামে তিরমি : হাদীস 3684
لولاك لما خلقت الأفلاك   
                                                
“আপনাকে সৃষ্টি না করলে আমি আসমানসমূহ ( কোন কিছুই ) সৃষ্টি করতাম না ।”

এটি লোকমুখে হাদীসে কুদসী হিসেবে যথেষ্ট প্রসিদ্ধ ।

অথচ হাদীস বিশেষজ্ঞরা এ ব্যাপারে একমত যে, এটি একটি ভিত্তিহীন রেওয়ায়াত , মিথ্যুকদের বানানো কথা । রাসূল (সাঃ) হদীসের সাথে এর সামান্যতম সম্পর্কও 
নেই ।

ইমাম সাগানী, আল্লামা পাটনী, মোল্লা আলী কারী, শাইখ আজলূনী, আল্লামা কাউকজী, ইমাম শাওকানী, মুহাদ্দেস আব্দুল্লাহ ইবনে সিদ্দীক আল-গুমারী এবং শাহ আব্দুল আযীয মুহদ্দেসে দেহলভী (রহঃ) প্রমুখ মুহাদ্দেসীনে কেরাম এটিকে জাল বলেছেন ।
-রিসালাতুল মাওযূআত : 9, তাযকিরাতুল মাওযূআত  : 86, আল-মাসনূ : 150, কাশফুল খাফা : 2/164, আল-লুউলুউল মারসূ : 66, আল- ফাওয়ায়েদুল মাজুআ : 2/410, আল-বূসীরী মাদেহুর রাসূলিল আযম (সঃ) : 75, ফাতওয়া আযীযিয়া : 2/129 -ফাতওয়া মাহমুদিয়া : 1/77 ।

কেউ কেউ বলেন যে, এই রেওয়ায়াত যদিও জাল; কিন্তু এর মূল বিষয়বস্তু ( অর্থাৎ আল্লাহ তা’লা রাসূল (সাঃ) এর খাতিরেই এই দুনিয়া সৃষ্টি করেছেন । তাঁকে পয়দা করার ইচ্ছা না করলে তিনি কোন কিছুই পয়দা করতেন না ) সঠিক ।
অথচ আল্লাহ তা’লা এই দুনিয়া ও সমগ্র জগতকে কেন সৃষ্টি করলেন, তা ওহী ছাড়া জানার কোনো উপায় নেই । ওহী শুধু কোরআন হাদীসেই সীমাবদ্ধ । কাজেই যতক্ষন পর্যন্ত কুরানের আয়াত কিংবা সহীহ হাদীসের মাধ্যমে এ কথা প্রমাণিত না হবে যে, একমাত্র তাঁর খাতিরেই সবকিছু সৃষ্টি করা হয়েছে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই আকীদা রাখার কোনো সুযোগ নেই । অথচ জানা কথা যে, এটি কুরআন মাজীদের কোনো আয়াত; কিংবা কোনো সহীহ হাদীসের মাধ্যমে প্রমাণিত নয় । এটিও উপরে বর্ণিত জাল রেওয়ায়াতের ভিত্তিতে সাধারণ মানুষের মধ্যে  প্রসিদ্ধি লাভ করেছে; যাকে তারা আকীদা তথা মৌলিক বিশ্বাস্য বিষয় বানিয়ে রেখেছে !! 
  -যাইলুল মাকাসিদিল হাসানা, যাইলু তানযীহিশ শারীয়াতিল মারফূআ ।

বর্তমানে সারাবিশ্বে মুসলমানের সংখ্যা আড়াইশো কোটিরও বেশী। পৃথিবীর প্রত্যেক তিনজন ব্যাক্তির মধ্যে একজন মুসলমান। অমুসলিমদের কাছে আমরা অর্থাৎ ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা মুসলমান বলে পরিচিত হলেও মুসলিমরা নিজেদের মধ্যে অনেক নামে পরিচিত। যেমন, হানাফী, শাফেয়ী, মালেকী, হাম্বলী প্রভৃতি। এই নাম গুলি আল্লাহ বা মুহাম্মাদ (সঃ) এর দেওয়া নয় এমনকি যাঁদের নামে এই মাযহাব তৈরি করা হয়েছে তারাও এই নাম গুলো দেয়নি।


মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত চারটি মাযহাব, দল বা ফিকাহ ইসলামের কোনো নিয়ম বা বিধান মেনে তৈরি করা হয়নি। কারন ইসলাম ধর্মে কোনো দলবাজী বা ফিরকাবন্দী নেই। মুসলমানদের বিভক্ত হওয়া থেকে এবং ধর্মে নানা মতের সৃষ্টি করা থেকে কঠোরভাবে সাবধান করা হয়েছে। এই মাযহাবগুলো রাসুল (সঃ) এবং সাহাবাদের (রাঃ) সময় সৃষ্টি হয়নি । এমনকি ঈমামগনের সময়ও হয়নি।
Design by Md.Sahahdad Hossain | Published by ZASJSS - মুসলিম উম্মার ঐক্য |